ক্রিকেটের ইতিহাস
যতদূর জানা যায়, ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছিলো ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে। মূলতঃ দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যাণ্ডে শুরু হলেও অষ্টাদশ শতাব্দীতে এটি ইংল্যাণ্ডের জাতীয় খেলায় পরিণত হয় এবং ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের দরবারে এই রোমাঞ্চকর ও জনপ্রিয় খেলা দেওয়ার কৃতিত্ব গ্রেট ব্রিটেনের। এই কারনে জন্য গ্রেট ব্রিটেনকে ক্রিকেটের জনক বলা হয়।১৮৪৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলা হলেও ইতিহাস স্বীকৃত টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ খেলা শুরু হয় ১৮৭৭ সালে। দর্শক সংখ্যার দিক দিয়ে ক্রিকেট, ফুটবলের ঠিক পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় খেলা হিসেবে স্বীকৃত। এই খেলার বিশ্বব্যাপী প্রশাসনের দায়িত্বে আছে একশোর বেশি সদস্যযুক্ত সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল, যদিও এর মধ্যে শুধু বারোটি সদস্য দেশই টেস্ট ক্রিকেট খেলে।এছাড়া ইংল্যান্ড এর সেই সময়কার উপনিবেশ দেশগুলো যেমন – ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদিতে এই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলাটি খুব জনপ্রিয় হয়েছিল।
উৎস
সম্ভবত স্যাক্সন অথবা নরম্যানদের সময়ে উইল্ড-এ বসবাসকারী শিশুরা ক্রিকেট খেলা চালু করেছিলো। উইল্ড দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যাণ্ডের কেন্ট এবং সাসেক্স-এর মধ্যবর্তী একটি ঘন অরণ্য। ক্রিকেট খেলার সর্বপ্রথম স্পষ্ট উল্লিখিত তারিখ সোমবার, ১৭ই জানুয়ারি, ১৫৯৭ খ্রীস্টাব্দ (“পুরোনো পদ্ধতির” জুলিয়ান তারিখ; বর্তমান ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দ)।
সম্ভবত ক্রিকেট খেলা উদ্ভূত হয়েছিলো বোলস খেলা থেকে। যেহেতু বোলস একটু পুরানো খেলা, তাই মনে করা হয় বলটিকে তার লক্ষ্যের আগে ব্যাটসম্যান ব্যাট দিয়ে থামিয়ে সেটিকে আঘাত করে দূরে পাঠানো থেকেই ক্রিকেট খেলার উৎপত্তি। খেলা শুরু হয় মেষ-চারিত কোনো মাঠ বা ফাঁকা জায়গায়, মূল সরঞ্জামের মধ্যে বল হিসাবে ব্যবহার করা হয় ভেড়ার দলা পাকানো পশম (বা এমনকি একটি পাথর অথবা একটি ছোটো কাঠের ডেলা); ব্যাট হিসাবে ব্যবহার করা হয় একট লাঠি বা একটি বাঁকা দণ্ড বা খামারবাড়ির কোনও যন্ত্র; উইকেট হিসাবে একটি বসার টুল বা গাছের গোড়ার শিকড় অথবা কোনো দরজা (যেমন একটি উইকেট দরজা)।

"ক্রিকেট" নামের উৎপত্তি
"ক্রিকেট" নামটির সম্ভাব্য উৎস হিসাবে অনেক শব্দের কথাই ধরা হয়। সর্বপ্রথম স্পষ্ট উল্লেখে এটাকে ক্রেকেট বলা হয়। এমনও হতে পারে, নামটি এসেছে মধ্য ওলন্দাজ ভাষাক্রিক(ইংরেজি krick(-e)) থেকে, যার অর্থ দণ্ড; অথবা পুরাতন ইংরেজি ভাষার শব্দ ক্রিক(ইংরেজি cricc) বা ক্রাইক(ইংরেজি cryce) থেকে, যার অর্থ পঙ্গু লোকের বগলে লাগিয়ে চলবার লাঠি বা ছড়ি, অথবা ফরাসি ভাষা ক্রিকোয়েট(ইংরেজি criquet) থেকে, যার অর্থ কাঠের থাম। ক্রিকস্টোয়েল(ইংরেজি krickstoel) একটি মধ্য ওলন্দাজ ভাষা যার অর্থ একটি দীর্ঘ নীচু বসার টুল যেগুলি গীর্জায় নতজানু হওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়; এটা অনেকটা প্রারম্ভিক ক্রিকেটে ব্যবহৃত দীর্ঘ নীচু উইকেটের মত যাতে দুটি স্টাম্প ব্যবহার করা হত। বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোপীয় ভাষা বিশেষজ্ঞ হেইনার গিলমেইস্টার-এর মতে, "ক্রিকেট" শব্দটির উৎপত্তি হকির মধ্য ওলন্দাজ শব্দ মেট দে (ক্রিক্ কেট্ (ইংরেজি krik ket)) সেন (অর্থাৎ "দণ্ড নিয়ে তাড়া") থেকে।
আরো সম্ভবত, ক্রিকেটের পরিভাষাগুলি গড়ে উঠেছে দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যাণ্ডের সেই সময়কার ভাষা থেকে এবং ফ্লেন্ডার্স দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থেকে, বিশেষত যখন দেশটি পঞ্চদশ শতাব্দীতে ডাচি অব্ বার্গাণ্ডির অন্তর্ভূক্ত ছিল, দক্ষিণ ইংল্যাণ্ডের কথ্য ভাষায় অনেক মধ্য ওলন্দাজ শব্দ প্রবেশ করেছে।
ক্রিকেটের উৎপত্তি:
ক্রিকেট খেলার উৎপত্তি হয় ইংল্যান্ডে, সম্ভবত ১৩শ শতাব্দীতে। প্রথম দিকে এটি ছিল শিশুদের খেলা। সময়ের সাথে সাথে এটি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ধারণা করা হয়, “ক্রিকেট” শব্দটি এসেছে মধ্য ডাচ শব্দ krick(-e) থেকে, যার অর্থ ‘লাঠি’। আবার কেউ কেউ মনে করেন এটি এসেছে আংলো-স্যাক্সন শব্দ cryce থেকে, যার অর্থ বাঁকা কাঠ। প্রমাণ হিসেবে পাওয়া যায় ১৫৯৮ সালের একটি রেফারেন্স, যেখানে "creckett" খেলার কথা বলা হয়েছে।
সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিক
ইংরেজ গৃহযুদ্ধ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলার অনেক উল্লেখ পাওয়া যায় এবং এটা ইঙ্গিত করে যে, ক্রিকেট খেলাটি প্রাপ্তবয়স্কদের খেলারূপে গণ্য হয়েছিল যাতে যাজক দল অংশগ্রহণ করতো, তবে সেই সময়ে প্রাদেশিক পর্যায়ের কোনো দলের প্রামাণিক তথ্য পাওয়া যায়নি। একইভাবে, এই খেলাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রসারণশীল জুয়াখেলার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় যা পুরো অষ্টাদশ শতাব্দী ধরে এই খেলাটিকে বৈশিষ্টমন্ডিত করে। তবে, সাধারণত এটা বিশ্বাস করা হয় যে, গ্রামীণ ক্রিকেট শুরু হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে, কিন্তু কাউন্টি (প্রাদেশিক) ক্রিকেট বা এই খেলায় লগ্নী তখনও শুরু হয়নি।
১৬৪৮ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নতুন পিউরিটান সরকার “বেআইনি সমাবেশগুলি” কঠোর হাতে দমন করেছিল, বিশেষ করে যেসব খেলায় প্রচুর কর্কশ আওয়াজ হয় যেমন ফুটবল। সাব্বাথ (রবিবার) বিষয়ে যে প্রথা ছিল, সেই আইন চাইছিলো তার চেয়ে আরো কঠোর কোনো রীতি। যেহেতু নিম্নবর্গের মানুষদের কাছে সাব্বাথ(রবিবার)-ই একমাত্র অবসর সময় ছিল তাই কমনওয়েল্থের সময় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছিলো। যাইহোক, এই খেলা কিছু বৈতনিক বিদ্যালয় যেমন উইনচেস্টার এবং সেন্ট পলস-এ জাঁকজমকভাবে বেড়ে উঠেছিলো। অলিভার ক্রনওয়েলের শাসনকালে ক্রিকেটকে যে নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছিলো এর কোনো অকাট্য প্রমাণ নেই, তবে সরকারি বিরতির সময়ে কিছু প্রমাণ আছে যেটা নির্দেশ করে যে এটা কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল কারণ তারা খেলাটিকে “সাব্বাথ (রবিবার) লঙ্ঘনের” কারণ হিসাবে দেখেনি। এটি বিশ্বাস করা হয় যে সাধারণভাবে আভিজাত্যরা ঐ মুহূর্তে গ্রাম্য খেলায় জড়িত থাকার মাধ্যমে ক্রিকেটকে গ্রহণযোগ্য করেছিলেন।
১৬৬০ সালের restoration এর ঘটনার পরই মূলত ক্রিকেট জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করে এবং ধারণা করা হয় ঐ সময়েই খেলাটি সর্বপ্রথম জুয়াড়িদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। ১৬৬৪ সালে ইংল্যান্ডের কাভালিয়ের (restoration এর ঘটনার পর গঠিত সর্বপ্রথম সংসদ) সংসদে “The Gaming Act 1664” পাস হয়, যে আইনে বাজির সর্বোচ্চ সীমা ১০০ পাউন্ড নির্ধারণ করে দেয়া হয়, তৎকালীন সময়ে যেটা বেশ বড় অঙ্কই ছিল।তৎকালীন ১০০ পাউন্ড বর্তমানের ১৫০০০ পাউন্ডের সমান। ১৭ শতকের শেষ দিকে ক্রিকেট অনেক জনপ্রিয় একটি খেলায় পরিণত হয়। ১৬৯৭ সালে সাসেক্সে অনুষ্ঠিত একটি “দুর্দান্ত ম্যাচ ” এর উল্লেখ সংবাদপত্রে পাওয়া যায়, যে ম্যাচে প্রতি দলে ১১ জন করে খেলেছিল এবং উভয়পক্ষের জন্য বাজির দর ছিল ৫০ গিনি।
১৬৯৬ সালে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা স্বীকৃতি পাওয়ার পর সর্বপ্রথম খবরের কাগজে ক্রিকেটের সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকে। কিন্তু ক্রিকেট সম্পর্কে নিয়মিত ও বিশ্লেষণধর্মী সংবাদ প্রকাশিত হওয়া শুরু হয় আরও অনেকদিন পরে। ১৮ শতকের প্রথমার্ধে গণমাধ্যমগুলো খেলাটির ভিতরের বিষয়ের চেয়ে বাজি ও জুয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশেই বেশি আগ্রহী ছিল।
ষ্ঠপোষকতা এবং খেলোয়াড়
জুয়ার হাত ধরেই খেলাটির শুরুর দিকের পৃষ্ঠপোষকদের আবির্ভাব ঘটে। কারণ অনেক জুয়ারিই নিজেদের দল গঠনের মাধ্যমে শক্তিশালী অবস্থানে যেতে চেয়েছিলেন এবং ধারণা করা হয় যে ১৬৬০ সালের restoration এর ঘটনার পরেই প্রথম “কাউন্টি দল” গঠিত হয়, বিশেষত যখন অভিজাত সদস্যরা পেশাদার হিসাবে গ্রাম ক্রিকেট থেকে “স্থানীয় বিশেষজ্ঞ” নিয়োগ করছিলেন। যতদূর জানা যায়, ১৭০৯ সালে দলগুলো প্রথম কাউন্টি নাম ব্যবহার শুরু করে। ১৬৯৭ সালের ম্যাচে সাসেক্সের বিরুদ্ধে সম্ভবত অন্য আরেকটি কাউন্টি অংশগ্রহণ করেছিল।
প্রাথমিক পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন একদল অভিজাত এবং ব্যবসায়ী যারা ১৭২৫ সাল থেকেই সক্রিয় ছিলেন, যে সময় থেকে পৃষ্ঠপোষকদের প্রভাবে ক্রিকেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হওয়া শুরু হয়। এদের মধ্যে ছিলেন রিচমন্ডের ২য় ডিউক, স্যার উইলিয়াম গেইজ, অ্যালেন ব্রডরিক এবং এডউইন স্টিড । প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে থমাস ওয়েইমার্ক এর ন্যায় কোনো একক খেলোয়াড়ের নাম প্রকাশিত হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট:
ক্রিকেট বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি খেলা, যার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বিবর্তন। ক্রিকেটের শুরু ইংল্যান্ডে হলেও সময়ের পরিক্রমায় এটি আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক বিশাল খেলাধুলার সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাস শুধু খেলার পরিসরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বিশ্ব রাজনীতির, সংস্কৃতির, জাতীয়তাবোধ ও অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক যাত্রা শুরু হয় ১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। এই ম্যাচ কেবল একটি প্রতিযোগিতা ছিল না, বরং ছিল দুটি জাতির মধ্যে ক্রীড়া কূটনীতির সূচনা। ধীরে ধীরে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ অন্যান্য দেশগুলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যুক্ত হতে থাকে। এশিয়ার উপমহাদেশে, বিশেষত ভারত ও পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়।
১৯৭১ সালে প্রথম ODI (One Day International) খেলা হয়, যা ক্রিকেটে সময়ের নতুন ধারণা আনে। এরপর ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট, যা ক্রিকেটকে একটি গ্লোবাল টুর্নামেন্টের রূপ দেয়। এরপর ২০০৩ সালে T20 ফরম্যাট চালু হলে ক্রিকেটের গতিপথ আরও গতিশীল হয়, এবং তরুণ প্রজন্মের মাঝে এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে শুধু খেলার ফলাফল নয়, বরং রয়েছে ঔপনিবেশিকতা, বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং প্রতিবাদের ইতিহাসও। যেমন, দক্ষিণ আফ্রিকা বর্ণবাদের জন্য দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ছিল। আবার বাংলাদেশের মতো উদীয়মান দেশ ক্রিকেটের মাধ্যমে নিজেদের জাতীয় আত্মপরিচয় ও গর্ব তুলে ধরেছে। ২০০০ সালে বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা লাভ এ ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তিনটি ফরম্যাটে খেলা হয়—টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) এই খেলাগুলোর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করে, যা প্রতিযোগিতা, নিয়মনীতি এবং র্যাংকিং নির্ধারণ করে।
সার্বিকভাবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাস একটি বিশ্বজুড়ে মানুষের আবেগ, সংস্কৃতি ও ঐক্যের ইতিহাস। এটি শুধু খেলার মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং একটি বৈশ্বিক সমাজে বিভিন্ন জাতি, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে একত্রিত করে এক বৃহৎ মানবিক যোগাযোগের সেতুবন্ধন রচনা করে চলেছে।